আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা
আইয়ুব-মোনেম চক্র ১৯৬৭ সালের ডিসেম্বর মাসে পূর্ব পাকিস্তানের ক'জন সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তির নামে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগ আনেন।আসলে শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফা কর্মসূচিকে বানচাল করার জন্য তারা এ অভিযোগ তৈরি করে।এ মামলার মূখ্য উদ্দেশ্য ছিল ছয় দফা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বাঙালিরা যাতে সংগঠিত হতে না পারে।প্রথমে এ মামলার প্রধান আসামি করা হয় লে.কর্ণেল মোয়াজ্জেম হোসেনকে। ক'দিন পর হঠাত দেখা গেল যে, অনেক আগে থেকে আটক শেখ মুজিবুর রহমানকে এ মামলায় জরিত করে তাঁকেই এক নম্বর আসামি করা হয়েছে।সরকার এ মামলাকে 'আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ' বললেও শেখ মুজিব এ মামলাকে 'পিন্ডির ষড়যন্ত্র ' বলে আখ্যায়িত করেন। ১৯৬৬ সালের ছয় দফা কর্মসূচি ঘোষণার পর ৮ মে শেখ মুজিবকে আটক করা হয়, এর প্রায় ১১ মাস পর ১৯৬৮ সালের ১৭ জানুয়ারি রাতে তাঁকে জেল থেকে নামমাত্র মুক্তি দেয়া হয় এবং জেলগেট থেকে আবার গ্রেফতার করে ঢাকা সেনানিবাসে একটি রুদ্ধদ্বার কক্ষে আটক রাখা হয়।
'আগরতলা ষড়যন্ত্র ' মামলার অন্যান্য আসামি ছিলেন কর্পোরাল আমীর হোসেন, এস.এস.সুলতান উদ্দীন আহমদ, কামাল উদ্দীন আহমদ, স্টুয়ার্ট মুজিবুর রহমান, ফ্লাইট সার্জেন্ট মাহফুজুল্লাহ প্রমুখ।স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীর কর্মচারী ও ৩ জন সি.এ.পি. অফিসার সর্বজনাব আহমদ ফজলুর রহমান, রুহুল কুদ্দুস ও শামসুর রহমান সহ সর্বমোট এ মামলায় আসামি ছিলেন ৩৫ জন। ১১ জনকে রাজসাক্ষী হওয়ায় ক্ষমা করা হয়। এ মামলার অভিযোগ হল, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ভারতীয় যোগসাজশে এবং ভারতীয় অস্ত্রসস্ত্রের সাহায্যে পূর্ব পাকিস্তানকে পাকিস্তান থেকে আলাদা করে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের ষড়যন্ত্র করছে। 'আগরতলা ষড়যন্ত্র ' মামলার উদ্দেশ্য ছিল শেখ মুজিবুর রহমান সহ কয়েকজন সৎ বাঙালি আফিসারকে দেশের শত্রু হিসাবে প্রমান করে তাদের কঠোর শাস্তি দিয়ে পূর্ব বাংলার প্রগতিবাদী আন্দোলনকে বন্ধ করে দেয়া। এ মামলার শুনানি শুরু হয় ১৯৬৮ সালের ১৯ জুন।
ReplyDeleteDrop a comment